শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১

মাকে পাঁচ টুকরো করে হত্যায় ছেলেসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

দেশ টিভি ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৫

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নূরজাহান বেগম (৫৭) নামের এক নারীকে হত্যার দায়ে ছেলেসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট গুলজার আহমেদ জুয়েল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত নূর জাহানের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯), তার সহযোগী মো. নীরব (২৮), নুর ইসলাম ওরফে কসাই নুর (২৮), আবুল কালাম মামুন (২৮), মো. মিলাদ হোসেন সুমন (২৮), মো. ইসমাইল (৩৫) ও মো. হামিদ (৩৫)। সবাই সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাজমারা গ্রামের বাসিন্দা।

জানা যায়, নিহত নারীর দুই সংসারের দুই ছেলে। আগের সংসারের ছেলে বেলাল তার মাকে জিম্মায় রেখে কয়েকজনের কাছ থেকে চার লাখ টাকা সুদে ঋণ নেন। ঋণ রেখে দেড় বছর আগে বেলাল মারা যান। এরপর ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য তার পরের সংসারের ভাই হুমায়ুনকে পাওনাদাররা চাপ দিতে থাকেন। হুমায়ুন তার মাকে বিষয়টি জানান।

তার মা ১৩ শতক জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে বলেন। হুমায়ুন মায়ের মালিকানাধীন ১৪ শতক ও বেলালের স্ত্রীর মালিকানাধীন ১০ শতক জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে বলেন। এতে তার মায়ের অসম্মতি ছিল।

অন্যদিকে ওই নারী তার ভাই দুলালের কাছে সাড়ে ৬২ হাজার টাকা পাওনা ছিলেন। পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য তিনি ভাইকে চাপ দেন। এ কারণে হুমায়ুনের মামাতো ভাই কালাম ও মামাতো বোনের জামাই সুমন তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। প্রতিবেশী ইসমাইল ও হামিদ হুমায়ুনকে প্রত্যক্ষ হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।

হুমায়ুন জবানবন্দিতে জানান, বেলালের স্ত্রীর জমি থেকে দুই শতাংশ হামিদকে ও বাকি আট শতাংশ ইসমাইলকে দেওয়ার মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়। এরপর মায়ের জমি সমান পাঁচ ভাগ করে হুমায়ুন, নোমান, সুমন, কালাম ও কসাই নুর ইসলামকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রতিশ্রুতিতে তারা ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর বাড়ির পাশে একটি ব্রিজের ওপর বসে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। ওই রাতেই ঘরের মধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে নূরজাহানকে হত্যার পাঁচ টুকরো করে পাওনাদারদের ধানক্ষেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখেন।

৭ অক্টোবর বিকেলে সুবর্ণচরের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিলের মাঝের বিভিন্ন ক্ষেত থেকে নূর জাহানের পাঁচ খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে জেলা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে।

অ্যাডভোকেট গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে পুলিশি তদন্তে হত্যার সঙ্গে সরাসরি বাদীর জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। একই সঙ্গে তার আরও ছয় সহযোগী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পায় পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালতে সাত আসামি উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় ২৭ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়।

মন্তব্য করুন