এমনিতেই পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মাঝে রমজান এলেই তা বেকড়ে যায় আরও। এ নিয়ে দেশের ক্রেতা সাধারণের অভিযোগের শেষ নেই। তবে এবারের রমজানে চাঁদপুরে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র।
নিত্যপণ্যসহ ইফতারের প্রায় সব খাদ্যসামগ্রীর দাম সহনীয় র্পযায়ে। ফলে স্বস্তিতে রয়েছেন জেলার নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
জেলা শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। রমজানে পণ্যের দামে কোনো প্রভাব এখনও পড়েনি।
চাঁদপুরের বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, কালো বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, লেবু ৪০-৬০ টাকা হালি, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা কেজি, আলু ২৫-৩০ কেজি, টমেটো ও গাজর ৩০-৪০ টাকা কেজি এবং খিরা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লাউ আকার ভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকা পিস এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে, যা আগে থেকেই এমন দামে বিক্রি হয়ে আসছিল।
জেলা শহর ও শহরতলীর প্রত্যেকটি কাঁচাবাজারে, যেমন: পাল বাজার, পুরানবাজার, বিপনীবাগ বাজার, নতুনবাজার ও ওয়ারলেস বাজারে এসব পণ্যের প্রচুর সরবরাহ লক্ষ করা গেছে।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাছের দামও রয়েছে আগের মতোই।
জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ও রাস্তার পাশে সকালে ভ্যানে করে সবুজ শাকসবজি ও ছোট ও মাঝারি সাইজের মাছ আরও একটু সস্তায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, কক মুরগি ২৮০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় তা বাজারে বিক্রি করতে দেখা না গেলেও গোপনে কেউ কেউ বিক্রি করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য নিষেধাজ্ঞার সময়ে তার দাম নাকি আকাশচুম্বী; কেজি বিক্রি হয়ে থাকে ৩ হাজার টাকা দরে। আর ৮০০/৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি আড়াই হাজার টাকার আশপাশে।
রমজানের আগেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে মাংসসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্য র্নিধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ব্যবসায়ীরা সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার কারণেই বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া, সয়াবিন তেলের সংকট মোকাবিলায় ইতোমধ্যে বাজারে বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (৫ মার্চ) বিকাল ও সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীনউদ্দীন হঠাৎ করে শহরের ব্যস্ততম বাজার বিপনীবাগ ও পাল বাজারে হাজির হন। সে সময় সদর উপজেলার ইউএনও সাখাওয়াত জামিল সৈকত ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তার সঙ্গে ছিলেন।
এ সময় ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন তিনি। পাশাপাশি নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক করেন। এছাড়া দোকানের সামনে মূল্যতালিকা ঝোলানোর আদেশ দেন তিনি।
এছাড়া, রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলোর দামও রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে।
বোতলজাত দুধ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার, এক লিটারের মাঠার বোতল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এছাড়া মাঝারি সাইজের তরমুজ ১০০ টাকা পিস, একটু বড় হলে তা ১৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
জেলা কৃষি বিভাগের কৃষিবিদ মোবরক হোসেন জানান, এবার চাঁদপুরে শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে বিধায় রমজানে শাকসবজির দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। জনগণও তাই স্বস্তিতে রয়েছে।
মন্তব্য করুন