রাতের শহরটা নীরব। স্টেশনের বেঞ্চে বসে আছে অয়ন। চোখ দুটো লাল, মুখটা নিস্তেজ। সে অপেক্ষা করছে, সেই মানুষটার জন্য—যে কথা দি য়েছিল ফিরে আসবে, ঠিক এই স্টেশনেই, এই রাতেই।
পাঁচ বছর আগে এই স্টেশনেই ওরা শেষ দেখা করেছিল। তুলি বলেছিল, “অয়ন, আমি যাচ্ছি, কিন্তু ফিরে আসব। তুমি অপেক্ষা করো।”
অয়ন হেসে বলেছিল, “আমি তো তুই ছাড়া কিছুই চিনিনা, তুই না ফিরলে এই স্টেশনটাই আমার ঠিকানা হবে।”
অয়ন সত্যিই কথা রেখেছে। প্রতিদিন রাতে সে স্টেশনে এসে বসে থাকে, ঠিক তুলি ফিরে আসবে ভেবে।
আজকের রাতটা অন্যরকম। আজ তুলি ফিরবে—অন্তত তেমনই একটা মেসেজ এসেছিল তুলি’র পুরনো নাম্বার থেকে।
অয়ন বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করছে।
ট্রেনটা এল, আবার চলে গেল।
তুলির দেখা নেই।
হঠাৎ এক বৃদ্ধ লোক এসে বললো, “এই ছেলেটা কি অয়ন? একটা চিঠি আছে তোমার নামে।”
অয়নের হাত কাঁপছে। চিঠি খুলে পড়তে গিয়ে চোখ ঝাপসা হয়ে গেল।
তুলির লেখা—
"অয়ন, আমি ফিরতে চেয়েছিলাম, সত্যিই। কিন্তু বাঁচতে পারিনি। ক্যানসার আমাকে নিয়ে গেল। আমার মায়ের হাতে চিঠিটা দিয়ে গিয়েছিলাম, যদি কখনো সে তোমায় খুঁজে পায়। তুমি এখন নিজের জন্য বাঁচো, প্লিজ। ভালো থেকো।"
স্টেশনের বাতিগুলো নিভে যাচ্ছিল একে একে।
অয়নের চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল—একটা ট্রেন চলে গেলো, আর কোনোদিন ফিরে আসবে না।
মন্তব্য করুন